ইরানে নারী
লিঙ্গ বৈষম্য সূচক | |
---|---|
মান | 0.496 (2012) |
অবস্থান | 107th |
মাতৃত্বকালীন মৃত্যু (প্রতি এক লক্ষে) | 21 (2010) |
সংসদে নারী | 6% (2016) |
মাধ্যমিক শিক্ষাসহ ২৫ উর্ধ্ব নারী | 62.1% (2010) |
শ্রম ক্ষেত্রে নারী | 49% (2011) |
বৈশ্বিক জেন্ডার গ্যাপ সূচক[২] | |
মান | 0.589 (2018) |
অবস্থান | ১৪৪-এর মধ্যে 142nd |
সমাজে নারী |
---|
|
ইরানে নারীরা ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের আগে পশ্চিমা ভাবধারার পোশাক পরার সুযোগ পেতেন।[৩] কিন্তু ১৯৭৯ সালে বিপ্লব আসার পর ইরানে নারীদের ওপর ইসলামী জীবনধারা চালু হয়। ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে ইরানি নারীরা শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করেন, তাদের বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত তুমুল মেধার স্বাক্ষর রাখতে দেখা যায়, এসবই সম্ভব হয় ইরানে ইসলামী শাসনের কারণে। ইসলামী বিপ্লব হয়েছিলো ১৯৭৯ সালে, এর ১০ বছরের মাথায় ইরানে নারীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রগতি বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ গুণ।[৪] ইরানে নারীদের প্রকাশ্যে রাস্তায় হিজাব পরা বাধ্যতামূলক, রাস্তায় ঘোরাফেরা করার স্বাধীনতা ইরানি নারীদের আছে তবে তাদের মাথায় হিজাব রাখা বাধ্যতামূলক। ইরানে ইসলামী বিপ্লবের আগে নারীরা পশ্চিমা পোশাক পরতেন যা ছিলো অশালীন কিন্তু ইসলামী শাসন আসার পর থেকে তারা শালীন পোশাক পরা শুরু করেন।[৫]
ইরানে শিক্ষা ক্ষেত্রে নারী এবং পুরুষের মধ্যে কোনো বৈষম্য নেই। তবে বিদ্যালয় সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের যৌন বিভাজন লক্ষ্য করা যায়, এটা করা হয় ছেলেমেয়েরা যাতে অনৈতিক যৌনকর্মে না জড়ায়, দেশের সব জায়গাতেই লিঙ্গ বিভাজন নীতি রয়েছে; নারী এবং পুরুষের মধ্যকার বন্ধুত্ব ছোটোবেলা থেকেই রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিকভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়, প্রাপ্তবয়স্ক হলে এটার উপরে নিষেধাজ্ঞাও দেখা যায় কঠোরভাবে।[৬][৭] ইসলামী বিপ্লবের আগে ইরানের নারীরা কর্মক্ষেত্রে ঢুকতে পারতেন খুব কম হারেই, নারীদের মাত্র সাড়ে ৪ শতাংশ ১৯৭০-এর দশকে কর্মক্ষেত্রে ঢুকতে পারতো, ইসলামী বিপ্লবের পর নারীদের জন্য নতুন নীতি প্রণীত হয়, নারীরা আগের তুলনায় শিক্ষিত এবং কর্মজীবী হবার সুযোগ ভালো করে পেতে থাকেন, ২০০৯ সালে হিসেব অনুযায়ী ইরানের ৩১ শতাংশ নারী কর্মজীবী ছিলেন।[৮] সমাজে প্রেম করে বিয়ে করা যায় তবে বিয়ের আগে প্রেমিক-প্রেমিকারা যৌনক্রিয়ায় জড়ালে জেল-জরিমানার শিকার হতে পারে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয়ও আর তাই ইরানের সমাজে প্রেম করে বিয়ে করাটা খুব একটা দেখা যায়না।[৯] পশ্চিমা ধাচে প্রেম করা ইরানে রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিকভাবে কড়াকড়িভাবে নিষেধ।[১০]
প্রখ্যাত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকো (যিনি ১৯৮৪ সালে মারা যান) ইরানের ইসলামী বিপ্লবকে সমর্থন দিয়ে বলছিলেন,
মিশেল ফুকো ইরানের নারীদের যারা ইসলামী শাসনের পক্ষে মিছিল দিয়েছিলেন তাদের পক্ষে কথা বলেছিলেন, তিনি এসময় কালে ইরান সফরও করেছিলেন।
হিজাববিরোধী আন্দোলন
মাহশা আমিনী
মাহশা আমিনী নামে একজন নারীকে ইরানের ধর্মীয় পুলিশ হিজাব না পরার অপরাধে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশের অধীনে থাকাবস্থায় সে মারা যায়। মাহশাকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পরলে ইরান ও বিশ্বব্যাপী হিজাববিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনটি সেপ্টেম্বর ২০২২ এর দিকে শুরু হয়, তবে সেপ্টেম্বর ২০২৩ এর দিকে এসে আন্দোলন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।[১৩] এই আন্দোলন ইসলামি শাসনব্যবস্থার ইরানের অন্যতম বড় আন্দোলন ছিলো।[১৪]
তথ্যসূত্র
- ↑ "Factfish Enrolment, engineering, manufacturing and construction, tertiary, female world statistics and data as Table"। factfish.com। ২০১৪-০৮-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৯-২৩।
- ↑ "The Global Gender Gap Report 2018" (পিডিএফ)। World Economic Forum। পৃষ্ঠা ১০–১১।
- ↑ "Iranian women - before and after the Islamic Revolution"। bbc.com। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ Shavarini, Mitra K. (২০০৫)। "The Feminisation of Iranian Higher Education"। International Review of Education / Internationale Zeitschrift für Erziehungswissenschaft / Revue Internationale de l'Education। ৫১ (৪): ৩২৯–৩৪৭। আইএসএসএন 0020-8566।
- ↑ "Iranian women gather to mark Modesty and Hijab Day"। tehrantimes.com। ১২ জুলাই ২০১৯।
- ↑ Bahramitash, Roksana (২০০২)। "Revolution, Islamization, and Women's Employment in Iran" (পিডিএফ)। Brown J. World Aff.। ৯ (২): ২২৯–২৪১। আইএসএসএন 1080-0786। ২৬ মে ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০২০।
- ↑ Mehran, Golnar (২০০৩-০৮-০১)। "The Paradox of Tradition and Modernity in Female Education in the Islamic Republic of Iran"। Comparative Education Review। ৪৭ (৩): ২৬৯–২৮৬। আইএসএসএন 0010-4086। ডিওআই:10.1086/378248।
- ↑ Afshar, Haleh (১৯৯৭)। "Women And work in Iran"। Political Studies। Wiley। ৪৫ (৪): ৭৫৫–৭৬৭। ডিওআই:10.1111/1467-9248.00110।
- ↑ Elaine Sciolino (৪ অক্টোবর ২০০০)। "Love Finds a Way in Iran: 'Temporary Marriage'"। nytimes.com।
- ↑ Saeid Jafari (২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮)। "Love in the shadows: The Iranians who risk punishment for their 'white wedding'"। middleeasteye.net।
- ↑ রাহাত রাফি (১৬ জানুয়ারী ২০২০)। "ইরানের ইসলামি বিপ্লবে কেন এতো আগ্রহ ছিল দার্শনিক ফুকোর?"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২২ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০২০।
- ↑ আলতাফ পারভেজ (২৪ ডিসেম্বর ২০১৮)। "খোমেনি ও ফুকো: ৪০ বছর পর"। প্রথম আলো।
- ↑ Motamedi, Maziar। "Iran: One year after the death of Mahsa Amini"। Al Jazeera (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-১৬।
- ↑ "কঠোর অনুশাসনের ইরানে নারীর বিদ্রোহ"। প্রথম আলো। ২৬ ডিসেম্বর ২০২২।