গ্রেইম হোল
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | গ্রেইম ব্ল্যাক হোল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | কনকর্ড ওয়েস্ট, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া | ৬ জানুয়ারি ১৯৩১|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ কেনসিংটন গার্ডেন্স, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া | (বয়স ৫৯)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৮৮) | ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৫১ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৩১ ডিসেম্বর ১৯৫৪ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
নিউ সাউথ ওয়েলস | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সাউথ অস্ট্রেলিয়া | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১১ জুলাই ২০১৯ |
গ্রেইম ব্ল্যাক হোল (ইংরেজি: Graeme Hole; জন্ম: ৬ জানুয়ারি, ১৯৩১ - মৃত্যু: ১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০) নিউ সাউথ ওয়েলসের কনকর্ড ওয়েলস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[১] অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৪ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস ও সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন গ্রেইম হোল।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
নর্থ সিডনি বয়েজ হাইয়ে পড়াশুনো করেন। ১৯৪৯-৫০ মৌসুম থেকে ১৯৫৭-৫৮ মৌসুম পর্যন্ত গ্রেইম হোলের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।
সিডনি গ্রেড ক্রিকেটে সেন্ট জর্জ ক্লাবের পক্ষে খেলেন। ১৯ বছর বয়সে ১৯৪৯-৫০ মৌসুমের শেফিল্ড শিল্ডে নিউ সাউথ ওয়েলসের সদস্যরূপে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেন। এ খেলায় তেমন ভালো ব্যাটিং করেননি। তবে, বল হাতে নিয়ে ঘাটতি পুষিয়ে দেন। ব্যাট হাতে ২৩ ও ৬ রান তুললেও বল হাতে নিয়ে অভিষেক খেলাতেই ৬/৬১ পান। ফলে দলকে ১৯৬ রানের ব্যবধানে জয়ী হতে প্রভূতঃ ভূমিকা পালন করেন। ঐ মৌসুমের শীতকালে অ্যাডিলেডে পাড়ি জমান। সেখানে সন্দেহাতীতভাবে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন ও ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে অবসর গ্রহণের পূর্ব-পর্যন্ত খেলতে থাকেন।
১৯৫০ সালে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান ও ক্ল্যাক্সটন শিল্ডে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে সাউথ অস্ট্রেলিয়া স্টেট বেসবল দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ পান। তবে, ছয়মাস রাজ্যে বসবাসের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকায় অস্ট্রেলিয়ান বেসবল কাউন্সিল থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাদ পড়েন।[২]
১৯৫০-৫১ মৌসুমে শীল্ডের খেলায় ৩৯.৮৩ গড়ে ৪৭৮ রান তুলেন। সফররত এমসিসির বিপক্ষে রাজ্য দলের দুই খেলায় অংশ নিয়ে বেশ ভালো খেলেন। তবে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় রান তুলতে পারেননি। শেফিল্ড শিল্ডে ছন্দে ফিরে আসেন। কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে চমৎকার সেঞ্চুরি করেন তিনি।
১৯৫২-৫৩ মৌসুমে শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় বেশ কয়েকটি খেলায় অপরাজিত অবস্থায় মাঠ ছাড়েন। এ পর্যায়ে তার গড় ৮০-এর বেশি ছিল ও ব্র্যাডম্যান যুগের পর প্রথমবারের মতো সাউথ অস্ট্রেলিয়া শিরোপা জয়ে সমর্থ হয়। ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে শেফিল্ড শিল্ডে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৬৭০ রান তুলেন। তাসত্ত্বেও, সফরকারী দলের সদস্যরূপে নেয়া হয়নি। ১৯৫৩ সালের বড়দিনে অ্যাডিলেডে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭১ ও ২২৬ রান করেন। এটিই তার একমাত্র দ্বি-শতক ছিল।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে আঠারোটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন গ্রেইম হোল। ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫১ তারিখে মেলবোর্নে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৫৪ তারিখে একই মাঠে ও একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
১৯৫০-৫১ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল অস্ট্রেলিয়ায় আগমন ঘটায়। মেলবোর্নে অ্যাশেজ সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে খেলার জন্যে মনোনীত হন গ্রেইম হোল। এর মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে গ্রেইম হোলের অভিষেক ঘটে। এ পর্যায়ে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দল ইতোমধ্যে ৪-০ ব্যবধানে রাবার জয় করে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৩ রান তুলেন। তবে, তার এ সংগ্রহ ইংল্যান্ডের জয়কে ক্ষাণিকটা বিলম্বে নিয়ে যায়। ১৯৩৮ সালের পর এটিই ইংল্যান্ডের প্রথম জয় ছিল। এছাড়াও, লেন হাটনকে ৭৯ রানে বোল্ড করেছিলেন তিনি।
১৯৫১-৫২ মৌসুমে তিনি রান খরায় ভুগতে থাকেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নয় ইনিংসে মাত্র ১৯০ রান তুলতে সমর্থ হয়েছিলেন। খুব কমই ব্যাট হাতে সফল হন। ব্রিসবেনের দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৪৫ রান তুলেছিলেন। সিডনিতে চূড়ান্ত টেস্টে ৬২ রান করেন।
পরের মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা দল অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় ও ২-২ ব্যবধানে সিরিজ ড্র করে। এবারও তিনি ব্যর্থতার পরিচয় দেন। কেবলমাত্র অ্যাডিলেডে চতুর্থ টেস্টে ৫৯ রানের ধ্রুপদী ইনিংস খেলেছিলেন। টেস্টের বাইরের খেলাগুলোয় দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে বেশ ভালো খেলা উপহার দেন। সিডনিতে অস্ট্রেলিয়া একাদশের সদস্যরূপে ৯৭ ও এ সফরের শেষদিকে অ্যাডিলেডে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ১০২ রান তুলেছিলেন গ্রেইম হোল।
ইংল্যান্ড গমন, ১৯৫৩
১৯৫৩ সালের গ্রীষ্মকালে লিন্ডসে হ্যাসেটের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। শক্তির ভারসাম্য অনেকাংশেই স্বাগতিক দলের দিকে ঝুঁকে পড়ে ও ওভালে সিরিজের শেষ খেলায় তারা অ্যাশেজ জয়ে সমর্থ হয়। এ টেস্টে রান সংগ্রহ করার বেশ দূরূহ ছিল।
ট্রেন্ট ব্রিজে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে নামেন। ঐ সময়ে প্রচলিত নিয়মে প্রথম টেস্ট এখানে হতো। দুইবার অ্যালেক বেডসারের শিকারে পরিণত হন যথাক্রমে ০ ও ৫ রানে। কিন্তু, লর্ডসের দ্বিতীয় ইনিংসে কার্যকরী ৪৭ রানের ইনিংস অস্ট্রেলিয়াকে যথেষ্ট সহায়তা করে। পাশাপাশি স্লিপ অঞ্চলে অবস্থান করে চারটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন তিনি। ওল্ড ট্রাফোর্ডে নীল হার্ভের সাথে চতুর্থ ইনিংসে ১৭৩ রান তুলে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহকে ৩১৮ রানে নিয়ে যেতে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন।
হেডিংলিতে গ্রেইম হোল স্বরূপ ধারণ করেন। প্রথম ইনিংসে অ্যালেক বেডসারের বলে টনি লকের কটে পরিণত হবার পূর্বে ৫৩ রান ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩ রান করেন। এ পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ার রানের দরকার ছিল। টম গ্রেভেনির বলে স্কয়ার লেগ অঞ্চল দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে কটে পরিণত হন। এরপর অস্ট্রেলিয়া দল জয়ের দিকে আর ধাবিত হয়নি। ওভালে প্রথম দিনে বেশ ভালো খেলে ৩৭ রান তুলেন। এ সিরিজ শেষে ২৭.৩০ গড়ে ২৭৩ রান তুলেন। টেস্ট গড়ের দিক দিয়ে লিন্ডসে হ্যাসেট, আর্থার মরিস ও নীল হার্ভের পরবর্তী স্থান দখল করেন। এ পর্যায়ে তিনি হাল ছাড়েননি কিংবা উত্তরণও ঘটাতে পারেননি। সমগ্র সফরে ৩৩.৮৭ গড়ে ১১১৮ রানের পাশাপাশি ২২ ক্যাচ লুফেছিলেন। তবে, খুব কমই বল হাতে তাকে দেখা গিয়েছিল।
পরবর্তী গ্রীষ্মে ব্রিসবেনে লেন হাটনের নেতৃত্বাধীন সফরকারী ইংরেজ দলের বিপক্ষে ৫৭ রানের মনোজ্ঞ ইনিংস খেলেন। সিডনি ও মেলবোর্নে উপর্যুপরী তিনবার ফ্রাঙ্ক টাইসনের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। এরপর আর তাকে দলে নেয়া হয়নি।
খেলার ধরন
ধ্রুপদী ভঙ্গীমায় ব্যাটিংকর্মে অগ্রসর হতেন। অফ ব্রেক বোলিংয়ের পাশাপাশি মাঠের যে-কোন অবস্থানে নিজেকে মানিয়ে নিতেন। দৃশ্যতঃ অস্ট্রেলিয়া দলকে নেতৃত্ব দানের প্রয়োজনীয় গুণাবলীর ঘাটতি ছিল না তার। পিছনের পায়ে ভর রেখে খেলেন। ধীরলয়ে স্ট্রোকস খেলতেন। দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলিং থেকে নিজেকে সড়িয়ে রাখতেন। তবে, টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে পরিচিত করতে পারেননি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে অভিষেকের পূর্বে মৌসুম বহির্ভূত সময়ে স্থানীয় নিউ সাউথ ওয়েলস প্রতিযোগিতায় বেসবল খেলায় অংশ নিতেন তিনি।
অবসর
আরও তিনবছর সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলার পর অবসর নিতে বাধ্য হন। ব্রুস ডুল্যান্ডের বোলিংয়ে স্যাম লক্সটনকে আউট করতে গিয়ে আঘাত পান। স্যাম লক্সটনের ক্যাচ নিয়ে বদমেজাজি মনোভাব প্রদর্শনের কারণে চুক্তির নির্ধারিত তিন বছর পূর্বে তাকে দলের বাইরে চলে যেতে হয়। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে যোগ দেন।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩৬.৬৬ গড়ে ৫,৬৪৭ রান তুলেন। এগারোটি শতক হাঁকান ও ৪৪.০৩ গড়ে ৬১ উইকেট পান। সংগৃহীত ৮২ ক্যাচের অধিকাংশ স্লিপ অঞ্চলে অবস্থান করে পেয়েছেন। টেস্টে ২৫.৪৫ গড়ে ৭৮৯ রান ও ৪২ গড়ে তিন উইকেট পান। এছাড়াও, ২১ ক্যাচ তালুবন্দী করেন।
১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০ তারিখে ৫৯ বছর বয়সে ক্যান্সারজনিত রোগে আক্রান্ত দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার কেনসিংটন গার্ডেন্স এলাকায় গ্রেইম হোলের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
- ↑ "Australia – Test Batting Averages"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০১৯।
- ↑ Harris, J.O (2009). Queensland Baseball 1905–1990. p. 49.
আরও দেখুন
- ফ্রাঙ্ক টাইসন
- শেফিল্ড শিল্ড
- জ্যাক আইভারসন
- নিউ সাউথ ওয়েলস ক্রিকেট দল
- অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেটারদের তালিকা
বহিঃসংযোগ
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে গ্রেইম হোল (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে গ্রেইম হোল (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)