প্লাটিপাস
হংসচঞ্চু বা হাঁসঠুঁটো[১] সময়গত পরিসীমা: ৬.৬–০কোটি অন্ত্য ক্রিটেশিয়াস থেকে সাম্প্রতিক | |
---|---|
ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (আইইউসিএন ৩.১)[২] The IUCN lists the platypus on its Red List as Least Concern.[২] | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী জগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | স্তন্যপায়ী |
বর্গ: | মনোট্রিমাটা |
পরিবার: | অর্নিথোরিঙ্কিডি |
গণ: | অর্নিথোরিঙ্কাস ব্লুমেনবাখ, ১৮০০ |
প্রজাতি: | অ. অ্যানাটিনাস |
দ্বিপদী নাম | |
অর্নিথোরিঙ্কাস অ্যানাটিনাস (শ, ১৭৯৯) | |
প্লাটিপাসের আবাসস্থল (নীল - প্রাকৃতিক, লাল - আনীত) |
হংসচঞ্চু বা হাঁসঠুঁটো বা প্লাটিপাস (ইংরেজি: Platypus;বৈজ্ঞানিক নাম: Ornithorhynchus anatinus ) হল মনোট্রিমাটা বর্গের অন্তর্ভুক্ত ছোট্ট স্তন্যপায়ী প্রাণী, যা তাসমানিয়া এবং দক্ষিণ ও পূর্ব অস্ট্রেলিয়ায় এরা বসবাস করে।[৩] নদী ও নদীতীরবর্তী এলাকা এদের আবাসস্থল হিসেবে বিবেচিত। দু'টি স্তন্যপায়ী প্রাণী গোত্রের ( অন্যটি হলো একিদনা) একটি হিসেবে প্লাটিপাস ডিম পাড়ে। ১৯শ শতকে প্লাটিপাস সম্বন্ধে ইংরেজ জীববিজ্ঞানীরা প্রথম বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করেন।[৪]
বৈশিষ্ট্য
প্লাটিপাস দেখতে বীভারের ন্যায় একই রকম। এর দেহের রঙ বাদামী প্রকৃতির, লোমশ দেহ এবং প্রশস্ত ও সমান্তরাল লেজ রয়েছে। পায়ের আঙ্গুলের মাঝখানে চামড়া থাকার ফলে এটি ভাল সাঁতার কাটতে পারে। নাক বেশ বড় এবং রবারের ন্যায়। এ ধরনের নাকের বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি হংসচঞ্চু নামে পরিচিত। হাঁসের চঞ্চু বা ঠোঁটের ন্যায় দেখতে। প্লাটিপাস বড় কিংবা ছোট উভয় ধরনের হতে পারে। বৃহৎ আকৃতির প্লাটিপাস তাসমানিয়া এবং ছোটটি কুইন্সল্যান্ডে দেখা যায়।[৩] প্রাপ্তবয়স্ক প্লাটিপাস ১ কেজি (২ পা) থেকে ৩ কেজি (৭ পা) ওজনের হতে পারে। এর দেহ ৩০ সেমি (১২ ইঞ্চি) থেকে ৪০ সেমি (১৬ ইঞ্চি) লম্বা হয়। লেজ ১০ সেমি (৪ ইঞ্চি) থেকে ১৫ সেমি (৬ ইঞ্চি) লম্বাটে আকৃতির হয়।[৩] পুরুষ প্লাটিপাসগুলো স্ত্রীজাতীয় প্লাটিপাসের তুলনায় গড়পড়তা এক-তৃতীয়াংশ বড় হয়। পুরুষ প্লাটিপাসের পায়ে ধারালো নখর রয়েছে যাতে বিষাক্ত পদার্থ বিদ্যমান।[৫] এ বিষে আক্রান্ত হয়ে মানুষ না মরলেও কুকুরের ন্যায় ছোট ছোট প্রাণীগুলো মৃত্যুবরণ করতে পারে। প্রায় চার মাসের মতো আক্রান্ত জায়গায় ব্যথা অনুভব হতে পারে। ক্ষতস্থানে রক্ত ঝরে পড়া অবস্থায় বিষের মাত্রা বাড়তে পারে।
জীবনপ্রণালী
প্লাটিপাস দিনের বেলায় ঘুমায়। সাধারণতঃ রাতের বেলায় এরা চলাফেরা করে। সাঁতারে দক্ষতা থাকায় অধিকাংশ সময়ই এরা জলের মধ্যে অতিক্রমণ করে। পায়ের সাথে সংযুক্ত রয়েছে পায়ের পাতা। যখন এটি সাঁতার কাটে তখন সম্মুখের দু'টো পা নড়াচড়া করে। লেজ এবং পিছনের পায়ের সাহায্যে ডানে অথবা বামে ঘুরতে পারে কিন্তু দ্রুত চলাফেরায় সহায়তা করে না।
অন্য প্রাণী খেয়ে প্লাটিপাস নিজেদের জীবন বাঁচায়। কেঁচো, পোকামাকড়ের ডিম, স্বাদু জলের চিংড়ি, ইয়াবি প্লাটিপাসের প্রধান খাদ্য হিসেবে বিবেচিত।
চঞ্চুর সাহায্যে নদীর তলা খনন করে অথবা সাঁতারকালীন কোন প্রাণীকে ধরে খাদ্য সংগ্রহ করে। এর নাক অনেক বিশেষ অনুভূতিসম্পন্ন যা অন্য প্রাণীর তুলনায় বেশি। সাঁতারের সময় এরা চোখ বন্ধ রাখে। তখন তারা অন্যান্য ইন্দ্রিয় দিয়ে শ্রবণ, স্পর্শ কিংবা বিদ্যুতায়িত তরঙ্গ ব্যবহার করে।
জীবনচক্র
ভূমিতে অবস্থানকালীন সময়ে প্লাটিপাস খরগোশের গর্তের ন্যায় ছোট, সোজা, ডিম্বাকৃতি গর্তে থাকে। গর্তগুলো ৩ মি (১০ ফু) থেকে ৮ মি (২৬ ফু) এর মধ্যে হয়ে থাকে। পানিস্তরের অল্প উঁচুতে গর্তগুলো গাছের শিকড়ের আড়ালে তৈরী করে। শাবক প্রসবের পূর্বে অর্থাৎ গর্ভবতী অবস্থায় স্ত্রী প্লাটিপাস গর্তটিকে আরো প্রায় ২০ মি (৬৬ ফু) বড় করে। গর্তের বিভিন্ন ছিদ্র পথগুলো বন্ধ করে ডিম রাখার উপযোগী করে নলখাগড়া দিয়ে বাসা বাঁধে।[৬]
প্রায় দশ দিন পর ডিম ফুঁটে বাচ্চা বের হয়। বাচ্চাগুলোকে স্ত্রী প্লাটিপাস দেখাশোনা করে। নতুন শাবকের জন্যে মা দুগ্ধস্থান তৈরী করে। প্লাটিপাসের কোন স্তনবৃন্ত না থাকলেও চামড়া ফুঁড়ে স্বল্পপরিমাণে দুধ বের হয়। ছোট্ট শাবকগুলো মায়ের চামড়ায় সৃষ্ট স্থান থেকে দুগ্ধ পান করে। ছয় সপ্তাহের মধ্যে শাবকগুলোর লোম জন্মে এবং অল্প জায়গায় চলাফেরা করে। চার মাস অতিক্রান্ত হলে বাচ্চাগুলো মায়ের দুধ পান করা থেকে বিরত হয়।[৩]
তথ্যসূত্র
- ↑ টেমপ্লেট:MSW3 Monotremata
- ↑ ক খ Lunney, D., Dickman, C., Copely, P., Grant, T., Munks, S., Carrick, F., Serena, M. & Ellis, M. (2008). Ornithorhynchus anatinus. 2008 IUCN Red List of Threatened Species. IUCN 2008. Retrieved on 9 October 2008. D
- ↑ ক খ গ ঘ "Platypus"। Department of Primary Industries and Water, Tasmania Online। ২০০৬-১০-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-২৩।
- ↑ Moyal, Ann Mozley (২০০৪)। Platypus: the extraordinary story of how a curious creature baffled the world। Baltimore: The Johns Hopkins University Press। আইএসবিএন 0-8018-8052-1।
- ↑ "Earning their spurs"। Australian Playpus Conservancy (English ভাষায়)। ২০০৯-০৯-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১২-১৬।
- ↑ "Platypus"। Evironmental Protection Agency, Queensland Government। ২০০৮-০৯-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-১৩।
গ্রন্থপঞ্জী
- Augee, Michael L. (২০০১)। "Platypus"। World Book Encyclopedia।
- Burrell, Harry (১৯৭৪)। The Platypus। Adelaide SA: Rigby। আইএসবিএন 0-85179-521-8।
- Fleay, David H. (১৯৮০)। Paradoxical Platypus: Hobnobbing with Duckbills। Jacaranda Press। আইএসবিএন 0-7016-1364-5।
- Grant, Tom (১৯৯৫)। The platypus: a unique mammal। Sydney: University of New South Wales Press। আইএসবিএন 0-86840-143-9।
- Griffiths, Mervyn (১৯৭৮)। The Biology of the Monotremes। Academic Press। আইএসবিএন 0-12-303850-2।
- Hutch, Michael; McDade, Melissa C., সম্পাদক (২০০৪)। Grzimek's Animal Life Encyclopedia। 12। Gale।
- Moyal, Ann Mozley (২০০৪)। Platypus: The Extraordinary Story of How a Curious Creature Baffled the World। Baltimore: The Johns Hopkins University Press। আইএসবিএন 0-8018-8052-1।
- Strahan, Ronald; Van Dyck, Steve (এপ্রিল ২০০৬)। Mammals of Australia (3rd সংস্করণ)। New Holland। আইএসবিএন 978-1-877069-25-3।
তথ্যচিত্র
- "Southern Exposure"। Eye of the Storm। ২০০০। Australian Broadcasting Corporation। ৭ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১২।
Platypus
DVD EAN 9398710245592 - "El Niño"। Eye of the Storm। ২০০০। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১২।
Platypus
বহিঃসংযোগ
- Biodiversity Heritage Library bibliography for Ornithorhynchus anatinus
- Platypus-Evolution and Conservation
- Platypus-Live Web Camera