ভাগ করো ও শাসন করো

প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী এই স্লোগানের কৃতিত্ব ম্যাসিডনের দ্বিতীয় ফিলিপকে দেওয়া হয়: প্রাচীন গ্রিক: διαίρει καὶ βασίλευε (ডিয়েইরি কাই বাসিলেভে), যার অর্থ "ভাগ করো ও শাসন করো"।

ভাগ করো ও শাসন করো নীতি (লাতিন: divide et impera), বা বিভক্ত করো ও জয় করো, রাজনীতিসমাজবিজ্ঞানে ক্ষমতা দখল ও তা রক্ষা করার একটি কূটকৌশল, যেখানে কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্যমান বিভাজনকে কাজে লাগানো হয় এবং ইচ্ছাকৃতভাবে এমন বিভাজন সৃষ্টি ও গভীর করা হয়। এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে দুর্বল করে শাসনকারীর অবস্থান মজবুত করা হয়।[]

প্রাচীনকালে এই শব্দগুচ্ছ প্রচলিত না হলেও, এই কৌশল বহু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। অউলাস গাবিনিয়াসের ক্ষেত্রে এর একটি উদাহরণ পাওয়া যায়, যিনি ইহুদি জাতিকে পাঁচটি পৃথক অংশে বিভক্ত করেন। এ ঘটনাটি ফ্লাভিয়াস জোসেফাস তার "দ্য জিউইশ ওয়ার" (De Bello Judaico) গ্রন্থের প্রথম বইয়ের ১৬৯-১৭০ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করেছেন।[]

স্ট্রাবো তার ভূগোলবিষয়ক গ্রন্থ 'জিওগ্রাফিকা'র অষ্টম খণ্ডে উল্লেখ করেন যে, আখাইয়ন লীগ রোমান প্রদেশ মেসিডোনিয়ার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যায়। রোমানরা বিভিন্ন রাজ্যের প্রতি ভিন্ন আচরণ করত; তারা কিছু রাজ্যকে বজায় রাখতো, আবার কিছু রাজ্যকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল।[]

এই অপকৌশল বাস্তবায়নে ব্যবহৃত উপাদানসমূহ:

  • শাসকের বিরুদ্ধে জোট গঠনের সম্ভাবনা দূর করার জন্য, জনগণকে বিভক্ত করার চেষ্টা করা হয়। এছাড়া, একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শক্তি বিতরণ করা হয়, যাতে তারা একে অপরকে পরাস্ত করে।
  • যারা শাসকের সঙ্গে সহযোগিতা করতে আগ্রহী, তাদের সহায়তা ও সমর্থন করা।
  • স্থানীয় শাসকদের মধ্যে অবিশ্বাস ও শত্রুতা উসকে দেওয়া।
  • অপ্রয়োজনীয় ব্যয়কে উৎসাহিত করা, যা রাজনৈতিক ও সামরিক খাতে ব্যয়ের সক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

কৌশলগত ও ব্যবহারিক প্রয়োগ

একজন শাসক এই অপকৌশল এর দ্বারা বিভিন্ন স্বার্থের মানুষের দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে বিভক্ত করে তাদের ওপর নিজের শাসন আরও দৃঢ় করতে পারে। নিক্কোলো মাকিয়াভেল্লি এই ধরনের সামরিক কৌশলের কথা তার দ্য আর্ট অফ ওয়ার বইয়ের ষষ্ঠ খণ্ডে উল্লেখ করেন যে একজন অধিনায়কের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত শত্রুর বাহিনীকে ভাগ করে ফেলা। শত্রুর বিশ্বাসযোগ্য সৈন্যদের প্রতি সন্দেহ প্রবণ করে তুলে অথবা শত্রুকে তার বাহিনী থেকে আলাদা করার মতো পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়ে এটা করা যায়, যাতে শত্রু দুর্বল হয়ে পড়ে।[]

ভাগ করো ও শাসন করো (divide et impera) নীতিটির জন্য ম্যাসিডনের দ্বিতীয় ফিলিপকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়। রোমান শাসক জুলিয়াস সিজার এবং ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট এই কৌশল ব্যবহার করেছিলেন (এর সাথে "বিভক্ত কর এবং রাজ কর" নীতিটিও)।

ভাগ করো ও শাসন করো এই কৌশলটি বিভিন্ন সম্রাটের আমলে আরোপিত হয়েছে, যেমন ফ্রান্সের একাদশ লুই এবং হাবসবুর্গ রাজতন্ত্র। এডওয়ার্ড কোক ইংরেজ আইনের গ্রন্থে এই কৌশলটিকে নিন্দা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, যখন লর্ড এবং কমন্সরা এই নীতিকে তাদের সাফল্যের মূল সঞ্চালক হিসেবে চেয়েছিল, তখন উত্তর দেওয়া হয়েছিল, "তোমরা অপরাজেয় হবে যদি তোমরা এক হও। 'ভাগ করো ও শাসন করো' এই নীতি বর্জন করা হয়েছে, কারণ শাসনের আগা ও গোড়া জনগণের সমর্থনের উপর নির্ভর করে।"

১৫ ফেব্রুয়ারি ১৬১৫ তারিখের একটি চিঠিতে স্যার ফ্রান্সিস বেকন রাজা প্রথম জেমসকে সামান্য পরিবর্তন করে সেপারা এট ইম্পেরা (পৃথক করো ও শাসন করো) এই বাক্যটি লিখেছিলেন। জেমস ম্যাডিসন ২৪ অক্টোবর ১৭৮৭ তারিখে টমাস জেফারসনকে একটি চিঠিতে এই কৌশলের পরামর্শ দিয়েছিলেন, যা দ্য ফেডারালিস্ট গ্রন্থের মূল তত্ত্বের একটি সারাংশ ছিল।[]

ইমানুয়েল কান্টের স্থায়ী শান্তি (১৭৯৫ ) রচনার প্রথম পরিশিষ্টে তিনটি রাজনৈতিক নীতির উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় নীতি হল দিভাইড এট ইম্পেরা (ভাগ করো ও শাসন করো)। অন্য দুটি নীতি হল: ফ্যাক এট এক্সকুসা (আগে কাজ করো, পরে অজুহাত দাও) এবং সি ফেসিসটি, নেগা (যদি অপরাধ করে থাকো, তা অস্বীকার করো)। দিভাইড এট ইম্পেরা , যা সাধারণত অত্যাচারের নীতি হিসেবে সমালোচিত, এই নীতির মূলে রয়েছে বিভাজন সৃষ্টি করে শাসন করার এক অসৎ চেষ্টা, যা সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং একতা ধ্বংস করে দেয়।[] কান্ট এই কৌশলটি ব্যবহার করেছিলেন, যখন তিনি একজন 'রাজনৈতিক দার্শনিক'-এর বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেন।

রাজনীতি

রাজনীতিতে, এই ধারণাটি এমন একটি কৌশলকে বোঝায় যা বিদ্যমান ক্ষমতার কাঠামোকে ভেঙে দেয় এবং বিশেষত কম ক্ষমতাসম্পন্ন গোষ্ঠীগুলিকে একত্রিত হতে বাধা দেয়, ফলে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয় এবং জনগণের মধ্যে কলহ উস্কে দেয় যাতে অভিজাতদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ রোধ করা যায় বা কৌশলটি বাস্তবায়নকারী জনগণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ রোধ করা যায়। এর লক্ষ্য হলো নিম্ন শ্রেণীকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো, যাতে বিপ্লব রোধ হয়, অথবা অভিজাতদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য বাড়তে থাকা অশান্তির একটি প্রত্যাশিত সমাধান প্রদান করা।[]

দিভাইড এট ইম্পেরা নীতিটি ট্রায়ানো বোকালিনি তার গ্রন্থ লা বিলান্সিয়া পলিটিকা-তে রাজনীতিতে একটি প্রচলিত নীতিরূপে উল্লেখ করেন।[]

অর্থনীতি

অর্থনীতিতে এই ধারণাটিকে বাজার বিভাজনের একটি কৌশল হিসেবে উল্লেখ করা হয়, যার মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে অংশগ্রহণকারীদের থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা আদায় করা সম্ভব হয়।[]

ঐতিহাসিক উদাহরণ

এশিয়া

মঙ্গোলরা একদিকে যেমন মধ্য এশিয়ার মুসলিমদের চীনে প্রশাসনিক কাজে নিযুক্ত করত, তেমনই অন্যদিকে চীনের হান ও খিতানদের মধ্য এশিয়ার বুখারায় মুসলিমদের উপর শাসনকর্তা হিসেবে প্রেরণ করত। এভাবে উভয় অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রভাব হ্রাস করতে তারা বিদেশিদের কাজে লাগায়।[১০]

কিছু ভারতীয় ইতিহাসবিদ, যেমন রাজনীতিবিদ শশী থারুর, দাবি করেন যে ব্রিটিশ শাসকরা তাদের শাসন দৃঢ় করা এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন এর উত্থান প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে প্রায়ই এই কৌশলটি প্রয়োগ করত। এ বিষয়ে লর্ড এলফিনস্টোন বলেন, "Divide et impera (ভাগ করো এবং শাসন করো) ছিল প্রাচীন রোমান নীতি এবং এটি আমাদের নীতি হওয়া উচিত।"[১১] ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ জন উইলসনের টাইমস লিটারারি সাপ্লিমেন্ট-এর একটি পর্যালোচনা থেকে জানা যায় যে, সাধারণভাবে যা মনে করা হয়, তার তুলনায় আরও সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ সম্ভবত বাস্তবতার কাছাকাছি।[১২] অন্যদিকে, হিন্দুত্বের প্রবক্তারা—যে মতাদর্শ বর্তমান ও বিগত বছরগুলোর ভারতীয় সরকারগুলোর ব্রিটিশদের আগমনের বহু শতাব্দী পূর্বের হিন্দু-মুসলিম সংঘাতের উপর জোরালোভাবে গুরুত্ব আরোপ করেন।

ঐতিহ্যবাহী জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিটি ভারতীয় আইনজ্ঞ এবং ভারতীয় পুনর্মিলন এর সমর্থক মার্কন্ডেয় কাটজু প্রকাশ করেন, যিনি ২০১৩ সালে পাকিস্তানের দ্য ন্যাশন পত্রিকায় লিখেছিলেন:[১৩]

১৮৫৭ সাল পর্যন্ত ভারতে কোনো সাম্প্রদায়িক সমস্যা ছিল না; সমস্ত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং শত্রুতা ১৮৫৭ সালের পরে শুরু হয়। নিঃসন্দেহে ১৮৫৭ সালের আগেও হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে কিছু পার্থক্য ছিল, হিন্দুরা মন্দিরে যেত এবং মুসলমানরা মসজিদে যেত, কিন্তু কোনো শত্রুতা ছিল না। প্রকৃতপক্ষে, হিন্দু ও মুসলিমরা একে অপরকে সাহায্য করত; হিন্দুরা ঈদ উৎসবে অংশ নিত এবং মুসলমানরা দোলযাত্রাদীপাবলিতে অংশ নিত। মুঘল, আওধের নবাব, মুর্শিদাবাদ, টিপু সুলতান প্রমুখ মুসলিম শাসকরা সম্পূর্ণরূপে ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন; তাঁরা রামলীলার মতো অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন এবং দোলযাত্রা, দীপাবলি প্রভৃতি উৎসবে অংশগ্রহণ করতেন। মুন্সি শিব নারায়ণ আরাম, হর গোপাল তোফতা প্রমুখ হিন্দু বন্ধুদের প্রতি মির্জা গালিব এর লেখা স্নেহপূর্ণ পত্রাবলী তৎকালীন হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যেকার প্রীতির সাক্ষ্য বহন করে। ১৮৫৭ সালে সংঘটিত মহাবিদ্রোহে হিন্দু ও মুসলমানরা একযোগে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। এই ঘটনা ব্রিটিশ সরকারকে এতটাই বিস্মিত করে যে বিদ্রোহ দমনের পর তারা ‘ভাগ করো এবং শাসন করো’ নীতি প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে (বি.এন. পান্ডে রচিত History in the Service of Imperialism অনলাইনে দ্রষ্টব্য)। ১৮৫৭ সালের পর থেকে সমস্ত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের দ্বারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কৃত্রিম উপায়ে ঘটানো হয়। ব্রিটিশ কালেক্টর গোপনে হিন্দু পণ্ডিতকে ডেকে এনে অর্থ প্রদান করতেন এবং তাঁকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে নির্দেশ দিতেন; অনুরূপভাবে তিনি গোপনে মৌলভিকেও ডেকে এনে অর্থ প্রদান করতেন এবং তাঁকে হিন্দুদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে নির্দেশ দিতেন। এই সাম্প্রদায়িক বিষ আমাদের রাজনৈতিক অস্থিমজ্জায় বছরের পর বছর এবং দশকের পর দশক ধরে প্রবেশ করানো হয়েছে।[১৩]

ইতিহাসবিদ জন কেই ব্রিটিশ নীতি সম্পর্কে ভিন্ন মত পোষণ করেন, তিনি লিখেছেন:

‘ভাগ করো ও শাসন করো’ এবং ‘হিন্দু-মুসলিম শত্রুতা উস্কে দাও’— এই ধরনের বহুল প্রচলিত অভিযোগগুলি, যেগুলির একটি বৃহত্তর ম্যাকিয়াভেল্লীয় উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে করা হয়, পরবর্তীকালে দেশভাগের পূর্বাভাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে এগুলোর তেমন কোনো তাৎপর্য নেই। ‘ভাগ করো ও শাসন করো’ একটি শাসক নীতি হিসেবে ধরে নেয় যে এর আগে একটি অবিচ্ছেদ্য সত্তা ছিল।ব্রিটিশ শাসনের মাধ্যমেই ভারত যখন রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিল— এবং এমনকি তাদের শাসনের ফলে সৃষ্ট বিরোধিতার দ্বারাও নয়— সেহেতু এই ধরণের কোনো কিছুর অস্তিত্ব ছিল না। বিভাজন ছিল জীবনের একটি বাস্তবতা। মওলানা মোহাম্মদ আলী যেমন পরে বলেছিলেন, 'আমরা ভাগ করি এবং তোমরা শাসন করো।' এই ধরনের বিভাজনকে স্বীকৃতি না দিয়ে, খতিয়ে না দেখে এবং বিবেচনায় না নিয়ে, ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠা করা তো কল্পনারও বাইরে, টিকিয়ে রাখাও সম্ভব হতো না। অন্যদিকে, সাম্প্রদায়িক সংঘাত উস্কে দেওয়া খুব কমই ব্রিটিশদের স্বার্থে ছিল।[১৪]

ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন উপপ্রধান জেনারেল এস. কে. সিন্‌হা লিখেছেন যে, ভাগ করো ও শাসন করো ধারণার বিপরীতে, ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী কার্যকরভাবে একীভূত ছিল:

অবিভক্ত সেনাবাহিনী ছিল ভারতে ব্রিটিশদের দ্বারা স্থাপিত একটি অনন্য প্রতিষ্ঠান... গোর্খা এবং গাড়োয়ালি ছাড়া, সকল যুদ্ধ ইউনিটে মুসলিম এবং অমুসলিম সৈনিকরা একসাথে কাজ করত। তারা একসাথে যুদ্ধ করেছে এবং শান্তির সময়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধা হিসেবে থেকেছে, নিজেদের রেজিমেন্টের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য বজায় রেখেছে। কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের আবির্ভাবের ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলেনি।১৯৪৭ সালের ৩রা জুন পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ছিল এবং দেশভাগের সময় মুসলিম ও অমুসলিম উভয় সৈন্যই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিরপেক্ষ ছিল। ১৯৪৭ সালের ৩ জুনের পর থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে।[১৫]

ফরাসি আলজেরিয়া

কাবিল মিথ হলো একটি ঔপনিবেশিক ধারণা যা ফরাসি আলজেরিয়ায় ফরাসি উপনিবেশ স্থাপনকারীরা আরব ও কাবিল জাতির মধ্যে একটি কাল্পনিক বিভেদ তৈরি করে প্রচার করেছিল। এই ধারণাটি মূলত আরব ও কাবিলদের মধ্যে কিছু মনগড়া পার্থক্যের গতানুগতিক ধারণার সমষ্টি।[১৬][১৭][১৮]

উনিশ শতকে আলজেরিয়ায় ফরাসি উপনিবেশবাদের সূচনার সাথে সাথে এই কল্পিত ধারণাটির উদ্ভব হয়। এই ধারণায় দাবি করা হয় যে কাবিল জাতি, আরবদের তুলনায়, "ফরাসি সভ্যতায়" অধিক সহজে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে মিশে যেতে সক্ষম।"[১৭][১৯]

উসমানীয় সাম্রাজ্য

উসমানীয় সাম্রাজ্য প্রায়শই "ভাগ করো এবং শাসন করো" কৌশল ব্যবহার করত, যার মাধ্যমে তারা আর্মেনীয়কুর্দিদের একে অপরের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিত। তুরস্ক প্রজাতন্ত্রে এই কৌশল আর কাজ করেনি, কারণ আর্মেনীয় গণহত্যায় আর্মেনীয়দের নির্মূল করা হয়।[২০]

ইউরোপ

  • হিরোডোটাস (তাঁর 'ইতিহাস' গ্রন্থের ৫.৩ অনুচ্ছেদে) দাবি করেন যে থ্রাসিয়ানরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে পারত, তাহলে তারা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী জাতি হতো।
  • এথেনীয় ইতিহাসবিদ থুসিডাইডিস তাঁর ‘পেলোপনেশীয় যুদ্ধের ইতিহাস’ গ্রন্থে দাবি করেন যে অ্যালসিবিয়াডিস পারস্যের রাষ্ট্রনায়ক টিসাফার্নেসকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, যাতে তিনি পারস্যের লাভের জন্য এথেন্স ও স্পার্টা উভয়কেই দুর্বল করে দেন।অ্যালসিবিয়াডিস টিসাফার্নেসকে বলেন, সবচেয়ে কম খরচের উপায় হলো হেলেনীয়দের নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করে দুর্বল হতে দেওয়া, যেখানে তার নিজের সামান্য খরচ হবে এবং কোনো ঝুঁকি থাকবে না।[২১]
  • কর্নেলিয়ুস তাকিতুস 'জার্মানিয়া'র ৩৩তম অধ্যায়ে লেখেন, "আমি কামনা করি, বিদেশি জাতিগুলো চিরকাল একে অপরের প্রতি ঘৃণা বজায় রাখুক... কারণ শত্রুদের মধ্যেকার কলহ আমাদের জন্য ভাগ্যের শ্রেষ্ঠ উপহার।"
  • গ্যালিক যুদ্ধকালে, সিজার গালদের উপজাতীয় সমাজের কলহপ্রবণতার সুযোগ নিয়ে "ভাগ করো ও শাসন করো" নীতি কাজে লাগিয়ে সহজেই তাদের পরাজিত করেন। পরবর্তীতে ভার্সিংগেটোরিক্সের নেতৃত্বে অবশিষ্ট গালরা একত্রিত হলেও, তাদের প্রতিরোধ অভিযানটিকে থামাতে পারেনি।[২২][২৩]
  • ১৮৪৮ সালের বিপ্লবসমূহে, যে সরকারগুলোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল, তারা বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন।[২৪][২৫]
  • ব্রিটিশ সাইপ্রাসের ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষ প্রায়শই গ্রিক সংখ্যাগরিষ্ঠদের আন্দোলন প্রশমিত করার জন্য তুর্কি সংখ্যালঘুদের উস্কে দিত।[২৬][২৭] এই নীতিটি সুপরিকল্পিতভাবে দ্বীপের বিদ্যমান বিভাজিত গ্রিক সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং (জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ) তুর্কি সংখ্যালঘুদের মধ্যে আরও বেশি বিদ্বেষের জন্ম দেয়। তুরস্কের একটি আক্রমণের মাধ্যমে উত্তর সাইপ্রাস রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর এই দ্বীপটি আজও বিভক্ত, যা কেবলমাত্র তুরস্ক কর্তৃক কূটনৈতিকভাবে স্বীকৃত।[২৮]
  • ১৯২১ সালে আয়ারল্যান্ডের বিভাজনকে ডেভিড লয়েড জর্জ কর্তৃক এই কৌশলের একটি ইচ্ছাকৃত প্রয়োগ হিসেবে দাবি করা হয়, যদিও আয়ারল্যান্ডের ধর্মীয় বিভাজন ছিল কুখ্যাত এবং দীর্ঘস্থায়ী। [২৯] স্ট্যানফোর্ডের ইতিহাসবিদ প্রিয়া সাতিয়ার মতে, আয়ারল্যান্ডের বিভাজন কোনো না কোনোভাবে ১৯৪৭ সালের ভারতের বিভাজনের একটি পূর্ব-পরীক্ষা ছিল।[৩০]

উপনিবেশবাদ

রিচার্ড মরোকের মতে, পশ্চিমা উপনিবেশবাদীরা চারটি বিভাজন ও শাসন কৌশল অবলম্বন করত:[৩১]

  1. উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লক্ষ্যবস্তু জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা;
  2. বিদ্যমান পার্থক্যগুলোকে আরও প্রকট করে তোলা;
  3. উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের সুবিধার জন্য এই পার্থক্যগুলির ব্যবহার; এবং
  4. ঔপনিবেশিক শাসনের পরবর্তী সময়েও এই বিভেদগুলোর টিকে থাকা‌।

পররাষ্ট্র নীতি

ভাগ করো ও শাসন করো নীতি অনুসরণ করে রাষ্ট্রগুলি প্রায়শই শত্রুপক্ষের সামরিক জোটকে দুর্বল করার চেষ্টা করতে পারে। এ প্রক্রিয়ায় সাধারণত শত্রু রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে প্রোপাগান্ডা বা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যার ফলে জোট সম্পর্কে সংশয় সৃষ্টি হয়। যখন জোট দুর্বল হয়ে পড়ে অথবা ভেঙে গেলে, শূন্যস্থানটিতে শত্রু রাষ্ট্র সহজেই সামরিক শক্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে।

ভাগ করো ও শাসন করো কৌশলটি কূটনীতিতে ব্যবহৃত 'পার্থক্য সৃষ্টির কৌশল'-এর ধারণার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এর উদ্দেশ্য হলো কোনো একটা গোষ্ঠীকে ভেঙে ফেলা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

কিছু বিশ্লেষক দাবি করেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একবিংশ শতাব্দীর মধ্যপ্রাচ্যে সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরোধকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়িয়ে তুলে ভাগ করো ও শাসন করো নীতি অনুসরণ করে। ব্রিটিশ সাংবাদিক নাফিজ আহমেদ ২০০৮ সালে র‌্যান্ড কর্পোরেশন কর্তৃক প্রকাশিত একটি গবেষণায় উল্লেখ করেন যে, মার্কিন সেনাবাহিনীর জন্য তৈরি করা "দীর্ঘ যুদ্ধ" শীর্ষক এই গবেষণায় মুসলিম বিশ্বের বিরুদ্ধে "ভাগ করো ও শাসন করো" কৌশলকে একটি সম্ভাব্য উপায় হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।[৩২]

ইসরায়েল

ইসরায়েলি ধর্মীয় বিষয়ক কর্মকর্তা প্রফেসর আভনার কোহেন, প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে, হামাস ছিল " ইসরায়েলের সৃষ্টি"।[৩৩] একই ধরনের মন্তব্য ইয়াসির আরাফাতও করেছেন।[৩৪]

ইসরায়েলের হামাসকে সমর্থনের অভিযোগগুলি ১৯৭০ ও ১৯৮০ সালের শুরুর দিকের ইঙ্গিত বহন করে, যখন মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজমান ছিল। প্রাক্তন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে, ইসরায়েল হামাসকে অর্থ ও সাহায্য প্রদান করেছে, মূলত প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) এর মতো সেক্যুলার প্যালেস্টাইনীয় সংগঠনগুলিকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইৎসাখ সেগেভ, যিনি ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গাজার ইসরায়েলি সামরিক গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, স্বীকার করেছেন যে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডকে অর্থ সাহায্য দিয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে হামাসে পরিণত হয়। এই সহায়তার উদ্দেশ্য ছিল বামপন্থী ও সেক্যুলার প্যালেস্টাইনীয় সংগঠনগুলিকে দুর্বল করা।[৩৫]

রাশিয়া

আধুনিক রাশিয়ার কর্মকাণ্ডে "ভাগ করো ও শাসন করো" কৌশলের বৈশিষ্ট্যও পরিলক্ষিত হয়। এটি অভ্যন্তরীণভাবে ভ্লাদিমির পুতিনের ক্ষমতা রক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়[৩৬] এবং আন্তর্জাতিকভাবে রাশিয়ার মিথ্যা তথ্য প্রচারের মাধ্যমে "শাসন নিরাপত্তা, রাশিয়ার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রাধান্য, এবং বিশ্বশক্তির অবস্থান" অর্জনের জন্য প্রয়োগ করা হয়।[৩৭]

আরোও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Spritzler, John (২০১৭-০৬-১৯)। Divide and Rule: The Left Vs. Right Trap (ইংরেজি ভাষায়)। Independently Published। আইএসবিএন 978-1-5215-4368-9 
  2. "Flavius Josephus, The Wars of the Jews, Book I, section 159"www.perseus.tufts.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৫ 
  3. "Strabo, Geography, BOOK VIII., CHAPTER VII., section 1"www.perseus.tufts.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৫ 
  4. Machiavelli, Niccolo (২০০৩)। Thomas, Steve, সম্পাদক। The Art of War6। The University of Adelaide Library। ২০০৭-০৬-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. "The Federalist #10"constitution.org 
  6. "Immanuel Kant: Perpetual Peace: Appendix I"Online Library of Liberty। ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০২১ 
  7. Xypolia, Ilia (২০১৬)। "Divide et Impera: Vertical and Horizontal Dimensions of British Imperialism" (পিডিএফ)Critique: Journal of Socialist Theory44 (3): 221–231। hdl:2164/9956অবাধে প্রবেশযোগ্যএসটুসিআইডি 148118309ডিওআই:10.1080/03017605.2016.1199629  p. 221.
  8. 1 §136 and 2 §225
  9. Webber, Harry (১৯৯৮-০৬-১৯)। Divide and Conquer: Target Your Customers Through Market Segmentation (ইংরেজি ভাষায়)। John Wiley & Sons। আইএসবিএন 978-0-471-17633-6 
  10. Buell, Paul D. (১৯৭৯)। "Sino-Khitan Administration in Mongol Bukhara"। Journal of Asian History। Harrassowitz Verlag। 13 (2): 137–8। জেস্টোর 41930343 
  11. Tharoor, Shashi (২০১৭)। Inglorious Empire: What the British Did to India (ইংরেজি ভাষায়)। Hurst। পৃষ্ঠা 101। আইএসবিএন 978-1-84904-808-8 
  12. Wilson, Jon, 2016, India Conquered: Britain's Raj and the chaos of empire, cited in a review of Tharoor's work by Elizabeth Buettner in "Debt of Honour: why the European impact on India must be fully acknowledged", Times Literary Supplement, 11 August 2017, pages 13-14.
  13. Markandey Katju (২ মার্চ ২০১৩)। "The truth about Pakistan" (ইংরেজি ভাষায়)। The Nation। ১০ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ 
  14. History of India, John Keay, pp. 464, 2010
  15. The Partition of Soldiers, General S.K. Sinha, The Asian Age, 2015, [১]
  16. উদ্ধৃতি সতর্কবার্তা: :1 নামসহ <ref> ট্যাগের প্রাকদর্শন দেখা যাবে না কারণ এটি বর্তমান অনুচ্ছেদের বাইরে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে বা একেবারেই সংজ্ঞায়িত করা হয়নি।
  17. Burke, Edmund (ডিসেম্বর ২০০৭)। "France and the Classical Sociology of Islam, 1798–1962"। The Journal of North African Studies12 (4): 551–561। আইএসএসএন 1362-9387ডিওআই:10.1080/13629380701633414 
  18. উদ্ধৃতি সতর্কবার্তা: :3 নামসহ <ref> ট্যাগের প্রাকদর্শন দেখা যাবে না কারণ এটি বর্তমান অনুচ্ছেদের বাইরে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে বা একেবারেই সংজ্ঞায়িত করা হয়নি।
  19. উদ্ধৃতি সতর্কবার্তা: :2 নামসহ <ref> ট্যাগের প্রাকদর্শন দেখা যাবে না কারণ এটি বর্তমান অনুচ্ছেদের বাইরে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে বা একেবারেই সংজ্ঞায়িত করা হয়নি।
  20. Cheterian, Vicken (২০১৬)। "Denial of violence. Ottoman past, Turkish present, and collective violence against the Armenians 1789–2009, Fatma Müge Göçek, New York, Oxford University Press, 2014, pp. 656, US$78.00 (hardback), HC 978-0199334209"। Nationalities Papers44 (4): 652–654। এসটুসিআইডি 156252380ডিওআই:10.1080/00905992.2016.1158006তবে, ইতিহাসের বিদ্রূপ এই যে, বলকান মুসলিম শরণার্থীদের জন্য পূর্ব প্রদেশ থেকে আর্মেনীয় জনগণকে উচ্ছেদ করার পরিবর্তে, তারা কার্যত আর্মেনীয়দের নির্মূল করে এবং পূর্ব আনাতোলিয়ায় একটি জাতিগত কুর্দি উপস্থিতি সুসংহত করে। সাম্রাজ্যবাদী "ভাগ করো ও শাসন করো" নীতি বাস্তবায়নের ক্ষমতা হারিয়ে, বর্তমান তুরস্ক কুর্দি জাতীয়তাবাদের মুখোমুখি। 
  21. Thucydides, History of the Peloponnesian War, 8.46.2
  22. "France: The Roman conquest"Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৫Because of chronic internal rivalries, Gallic resistance was easily broken, though Vercingetorix's Great Rebellion of 52 bce had notable successes. 
  23. "Julius Caesar: The first triumvirate and the conquest of Gaul"Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫Indeed, the Gallic cavalry was probably superior to the Roman, horseman for horseman. Rome's military superiority lay in its mastery of strategy, tactics, discipline, and military engineering. In Gaul, Rome also had the advantage of being able to deal separately with dozens of relatively small, independent, and uncooperative states. Caesar conquered these piecemeal, and the concerted attempt made by a number of them in 52 bce to shake off the Roman yoke came too late. 
  24. Edmund Maurice, C. (১১ ডিসেম্বর ২০১৯)। "The Revolutionary Movement of 1848-9 in Italy, Austria-Hungary, and Germany: With Some Examination of the Previous Thirty-three Years" 
  25. Magocsi, Paul Robert (১৮ জুন ২০১০)। A History of Ukraine: The Land and Its Peoples, Second Edition। University of Toronto Press। আইএসবিএন 9781442698796 
  26. Grob-Fitzgibbon, Benjamin (২০১১)। Imperial Endgame: Britain's Dirty Wars and the End of Empire। Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 285। আইএসবিএন 978-0-230-30038-5 
  27. Jordan, Preston Lim (২০১৮)। The Evolution of British Counter-Insurgency during the Cyprus Revolt, 1955–1959। Springer। পৃষ্ঠা 58। আইএসবিএন 9783319916200 
  28. "International Justice: The Case of Cyprus"। Washington, D.C.: The HuffPost। ১৩ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৭ 
  29. McGreevy, Ronan। "100 years ago today the partition of Ireland was made official"The Irish Times (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-০৪ 
  30. University, Stanford (২০১৯-০৩-০৮)। "Partition of 1947 continues to haunt India, Pakistan"Stanford News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-০৪ 
  31. Morrock, Richard (১৯৭৩)। "Heritage of Strife: The Effects of Colonialist "Divide and Rule" Strategy upon the Colonized Peoples"Science & Society37 (2): 129–151। আইএসএসএন 0036-8237জেস্টোর 40401707 
  32. "The Pentagon plan to 'divide and rule' the Muslim world"Middle East Eye (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-২৯ 
  33. Higgins, Andrew (২৪ জানুয়ারি ২০০৯)। "How Israel Helped to Spawn Hamas - WSJ"WSJ। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০২৪ 
  34. "How Israel went from helping 'create' Hamas to bombing it"The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ১৪ অক্টোবর ২০২৩। ১ মে ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০২৪ 
  35. উদ্ধৃতি সতর্কবার্তা: blowback নামসহ <ref> ট্যাগের প্রাকদর্শন দেখা যাবে না কারণ এটি বর্তমান অনুচ্ছেদের বাইরে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে বা একেবারেই সংজ্ঞায়িত করা হয়নি।
  36. Reddaway, Peter (২০১৮)। Russia's domestic security wars: Putin's use of divide and rule against his hardline allies। Palgrave Pivot। আইএসবিএন 978-3319773919 
  37. Karlsen, Geir Hågen (২০১৯-০২-০৮)। "Divide and rule: ten lessons about Russian political influence activities in Europe"। Palgrave Communications (ইংরেজি ভাষায়)। 5 (1): 1–14। আইএসএসএন 2055-1045ডিওআই:10.1057/s41599-019-0227-8অবাধে প্রবেশযোগ্য