ভূমিকা (চলচ্চিত্র)
ভূমিকা | |
---|---|
![]() "ভূমিকা" পোস্টার | |
পরিচালক | শ্যাম বেনেগল |
প্রযোজক | ললিত এম বিজলানি ফ্রেণী ভারিভা |
রচয়িতা | শ্যাম বেনেগল, গিরিশ কারনাড, সত্যদেব দুবে (সংলাপ) |
কাহিনিকার | হাঁসা ওয়াদকর |
উৎস | হাঁসা ওয়াদকর কর্তৃক সাংগত্যে আইকা |
শ্রেষ্ঠাংশে | স্মিতা পাতিল অমল পালেকর অনন্ত নাগ |
সুরকার | বনরাজ ভাটিয়া মজরুহ সুলতানপুরী বসন্ত দেব (কথা) |
চিত্রগ্রাহক | গোবিন্দ নিহালানি |
সম্পাদক | ভানুদাস দিবাকর রমনীক প্যাটেল |
পরিবেশক | শেমারু মুভিজ |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৪২ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
ভূমিকা হল শ্যাম বেনেগল পরিচালিত ১৯৭৭ সালের একটি ভারতীয় চলচ্চিত্র। ছবিতে স্মিতা পাতিল, অমল পালেকর, অনন্ত নাগ, নাসিরুদ্দিন শাহ্ এবং অমরিশ পুরি অভিনয় করেছিলেন।
চলচ্চিত্রটি মূলত মারাঠি ভাষার স্মৃতিচারণ। ১৯৪০-এর দশকের সুপরিচিত মারাঠি মঞ্চ এবং পর্দার অভিনেত্রী হাঁসা ওয়াদকর,- যিনি প্রাণবন্ত এবং অচিরাচরিত ভাবে জীবন কাটিয়েছিলেন এবং একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব ও আত্ম-পরিপূরণের অনুসন্ধানে মনোনিবেশ করেছিলেন, তাঁর রচিত সাংগত্যে আইকার উপর ভিত্তি করে এটি নির্মিত।[১] একটি কিশোরী থেকে একজন জ্ঞানী কিন্তু গভীরভাবে আহত মধ্যবয়সী মহিলার চরিত্রে রূপান্তরিত হবার শক্তিশালী অভিনয় করেছিলেন স্মিতা পাতিল।
ছবিটি দুটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জয় করে। এটি ১৯৭৮ সালে শিকাগো চলচ্চিত্র উৎসবের কার্থেজ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল আমন্ত্রিত হয়েছিল, সেখানে এটি ১৯৭৮ সোনালী ফলক জিতেছিল, এবং ১৯৮৬ সালে এটি আলজেরিয়ার চিত্র উৎসবে আমন্ত্রিত হয়েছিল।[২]
ঘটনা
ভূমিকা একজন অভিনেত্রী ঊষার (স্মিতা পাতিল) জীবন কাহিনী। সে গোয়ার দেবদাসী সম্প্রদায়ের প্রাচীন প্রথার বিখ্যাত মহিলা গায়িকার নাতনী। উষার মা (সুলভা দেশপান্ডে)) এক অভদ্র এবং মদ্যপ ব্রাহ্মণের পত্নী ছিল। তার মৃত্যুর পর, মায়ের আপত্তি সত্ত্বেও, পরিবারের এক গলগ্রহ ব্যক্তি কেশব দলভী (অমল পালেকর) ঊষাকে বোম্বে নিয়ে গিয়েছিল বোম্বাইয়ের একটি স্টুডিওতে গায়ক হিসাবে অডিশনের জন্য: ঊষার অনুরক্ত দিদিমার অনুমোদনে এবং মায়ের প্রচণ্ড আপত্তিতেও শেষ পর্যন্ত সে কিশোর তারকায় পরিণত হয়, এবং কেশবের সাথে প্রতিকূল নক্ষত্রজাত প্রেমের বিয়েতে পৌঁছোয়। অনাকর্ষণীয় এবং বয়স্ক কেশব -যে তার শৈশব থেকেই তার প্রতি লোভী ছিল- তার সাথে এই সম্পর্কটিকে (বিবাহ-পূর্ব গর্ভাবস্থায় পৌঁছেছিল) অনড়ভাবে অনুসরণ করার জন্য উষার উদ্দেশ্য পরিষ্কার করে বলা হয়নি। সম্ভবত, তার পরিবারের প্রতি কেশবের আনুগত্যের (এই কথা কেশব সব সময় তাকে স্মরণ করিয়ে দিত) কারণে এবং তার নিজস্ব পার্থিব সাফল্যের জন্য সে নিজেকে ঋণী মনে করেছিল; অথবা কেবল তাকে নিজের অবমাননাকর বাড়ি থেকে বাঁচার উপায় হিসাবে দেখেছিল। সে এমন একটি একগুঁয়ে মেয়েও, যে স্পষ্টভাবে তার অভিনয়জীবন উপভোগ করে এবং তার মায়ের (যে তাদের বিবাহের বিরোধিতা করেছিল কেশব তাদের বর্ণের নয় এই কারণ দেখিয়ে, একইভাবে চলচ্চিত্রের বিরোধিতা করে এর অখ্যাতির কারণ দেখিয়ে) বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করতে চায়।
বিবাহ সম্পন্ন হবার পরেও, কেশব তার ‘ব্যবসা ব্যবস্থাপক’ হিসাবে, তার প্রিয় তারকা রাজনের (অনন্ত নাগ) (যে নিজে তার সাথে প্রতিদানহীন প্রেমে আবদ্ধ) বিপরীতে তার অভিনয়ের বন্দোবস্ত করে কাজ চালিয়ে যায় দেখে ঊষা অবাক হয়। যেহেতু কেশবের নিজস্ব ব্যবসা চলেনি, পরিবার পুরোপুরি ঊষার আয়ের উপর নির্ভরশীল – যে সত্যকে কেশব স্পষ্টতই ক্ষতিকর মনে করে। সে এইভাবে একটি ভঙ্গুর অহং এবং কদর্য স্বভাবের সাথে হিংসুক স্বামী হবার পাশাপাশি (কার্যকরভাবে) একজন লোভী দালাল হয়ে ওঠে। সহ-অভিনেতাকে অপছন্দ করা সত্ত্বেও এবং মেয়ের জন্ম হবার পর ঊষা "কেবলমাত্র গৃহিণী হতে চায়" বলা সত্ত্বেও কেশব তাকে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে বাধ্য করে। অবধারিতভাবে তাদের সম্পর্কটি ক্রমশ বিষাক্ত হয়ে ওঠে, বিশেষত কেশবের সন্দেহ (তারকা-পত্রিকার গুজব থেকে) যে তার রাজনের সাথে সম্পর্ক রয়েছে, যদিও সেটি কিছুটা ঠিক ছিল। তার স্বামী দ্বারা মৌখিক এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন সহ্য করে এবং নিজের মেয়ে ও মাকে ছেড়ে পর্যায়ক্রমে হোটেলে থাকতে বাধ্য হয়ে, মরিয়া অসন্তুষ্ট অভিনেত্রী অবশেষে দুজন সঙ্গীকে প্ররোচিত করে: প্রথমে শূন্যবাদী ও স্ব-কেন্দ্রিক পরিচালক সুনীল বর্মাকে (নাসিরুদ্দিন শাহ্), যার সাথে সে দ্বৈত আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল (যেটি সুনীল ব্যর্থ করে), এবং তারপরে ধনী ব্যবসায়ী বিনয়াক কালেকে (অমরিশ পুরি), যে তাকে তার প্রাসাদতুল্য গৃহে প্রশ্রয়প্রাপ্ত উপপত্নী হিসাবে রাখে। এখানে ঊষা কিছুদিনের জন্য কার্যত দ্বিতীয় স্ত্রী হিসাবে এক ধরনের "সম্মান" পেয়েছিল, কালের মা (দীনা পাঠক), পুত্র এবং শয্যাশায়ী প্রথম স্ত্রীর কাছ থেকে ভালবাসা এবং প্রশংসা অর্জন করেছিল — কিন্তু সবচেয়ে প্রাথমিক দাবী স্বাধীনতার (সে যখন একদিন ছেলেটিকে নিকটস্থ একটি মেলায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল, তখন জানতে পারল) বিনিময়ে। কালের সামন্ততান্ত্রিক পুরুষশাসিত নিয়ম মানতে না পেরে, সে তার তখনো বৈধ স্বামী, ঘৃণ্য কেশবের হস্তক্ষেপে তার পালানোর একমাত্র আশা দেখতে পায়। কেশব তৎক্ষণাৎ তাকে বোম্বেতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে, যেখানে সমস্ত বিজ্ঞাপনী তার নিজের মুখ দিয়ে সজ্জিত। কেশব তাকে নিয়ে সেই একঘেয়ে হোটেলে রাখে যেখানে সে সম্পূর্ণ একাকী। যখন ঊষা চলে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন কালের বিরক্ত স্ত্রী মন্তব্য করেছিল, "বিছানা বদলে যায়, রান্নাঘর বদলে যায়। পুরুষের মুখোশ বদলে যায়, কিন্তু পুরুষের পরিবর্তন হয় না।" ঊষার মেয়ে, যে বড় হয়ে গেছে সে ঊষাকে তার এবং তার স্বামীর সাথে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানায়, কিন্তু ঊষা তা প্রত্যাখ্যান করে। চলচ্চিত্রটি শেষ হচ্ছে দেখা যায় ঊষা হোটেলের ঘরে একাকী, রাজনের কাছ থেকে একটি ফোন কল এসেছে।[১]
চরিত্র চিত্রণ
- স্মিতা পাতিল- উর্বশী ওরফে উষা
- অমল পালেকর- কেশব দলভী
- অনন্ত নাগ- রাজন
- অমরিশ পুরি- বিনায়ক কালে
- নাসিরুদ্দিন শাহ্- সুনীল বর্মা
- দীনা পাঠক- মিসেস কালে, বিনায়কের মা
- কুলভূষণ খারবান্দা- চলচ্চিত্র নির্মাতা হরিলাল
- সুলভা দেশপান্ডে- শান্তা
- কিরণ বৈরালে- সুষমা দলভী
- মোহন আগাশে- সিদ্ধার্থ সুতার
- বেঞ্জামিন গিলানী- অভিনেতা মোহন মুঘল রাজপুত্রের ভূমিকায় 'সাওয়ান কে দিন আয়ে' গানে
- অভিষেক
- শিশু রুকসানা- শিশু ঊষা
- বি ভি করন্থ- উষার বাবা
- কুসুম দেশপাণ্ডে- শান্তার মা
- রেখা সাবনীস- শ্রীমতী যশবন্ত কালে
- বেবি বিট্টো- শিশু সুষমা
- জি এম দুরানী- সংগীত শিক্ষক
- সুদর্শন ধীর- নৃত্য পরিচালক (তিনি এই ছবিরও নৃত্য পরিচালক)
- মাস্টার অভিতাব- দীনু
- সুনিলা প্রধান- অভিনেত্রী মিস.বালা 'প্রিন্সেস'
- ওম পুরি- 'এভিল কিং' চরিত্রে অভিনেতা
- সবিতা বাজাজ- বাসন্তী
তথ্যসূত্র
- ↑ "Shyam Benegal Retrospective, 2007"। ৩ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ Shyam Benegal Awards