রফিকুল ইসলাম (অধ্যাপক)
অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম | |
---|---|
বাংলা একাডেমির সাবেক সভাপতি | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ০১ জুলাই ২০২১ | |
পূর্বসূরী | অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান |
কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের সভাপতি | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮ | |
পূর্বসূরী | অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান |
প্রথম উপাচার্য | |
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় | |
কাজের মেয়াদ ২০ অক্টোবর ২০০৮ – ৮ এপ্রিল ২০০৯ | |
উত্তরসূরী | অধ্যাপক ড. মো: আব্দুস সাত্তার |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | মতলব উত্তর, চাঁদপুর, বাংলাদেশ | ১ জানুয়ারি ১৯৩৪
মৃত্যু | নভেম্বর ৩০, ২০২১ | (বয়স ৮৭)
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
দাম্পত্য সঙ্গী | জাহানারা ইসলাম |
মাতা | জান্নাতুন নেছা |
পিতা | মোঃ জুলফিকার আলী |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কর্নেল ইউনিভার্সিটি, মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়, মিশিগান-অ্যান আরবর বিশ্ববিদ্যালয়, হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | শিক্ষাবিদ, গবেষক, অধ্যাপক, লেখক |
যে জন্য পরিচিত | বাংলাদেশের প্রথম নজরুল গবেষক |
পুরস্কার | স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, নজরুল একাডেমি পুরস্কার, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক |
রফিকুল ইসলাম (জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৩৪- ৩০ নভেম্বর ২০২১) ছিলেন বাংলাদেশি লেখক এবং দেশের প্রথম নজরুল গবেষক।[১] তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক ও অত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নজরুল-গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক। তিনি স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক এবং বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে পুরস্কৃত করে। ২০০৩ সালে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ বছর’ বই লিখে লেখক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান।[২][৩]
জন্ম ও পৈতৃক নিবাস
রফিকুল ইসলাম ১৯৩৪ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
শিক্ষা
অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে লেখাপড়া করেন। ভাষাতত্ত্বে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন ও গবেষণা সম্পাদনা করেন আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়, মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়, মিশিগান-অ্যান আরবর বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্ট ওয়েস্ট সেন্টারে।
কর্মজীবন
১৯৫৮ সাল থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও নজরুল গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি একসময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাছাড়া তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক ঘোষণা করে। এবং তিনি কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮ তিনি কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের সভাপতি পদে যোগদান করেন। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ১লা জুন ২০২১ তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতি পদে যোগদান করেন।
আন্দোলন
তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বন্দিশিবিরে নির্যাতিত হন।
গবেষণা
ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তার বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা রয়েছে।
মৃত্যু
৩০ নভেম্বর ২০২১ ঢাকার বার্ধক্যজনিত রোগে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। [৪]
গ্রন্থতালিকা
- নজরুল নির্দেশিকা
- ভাষাতত্ত্ব
- An Introduction to Colloquial Bengali
- নজরুল জীবনী
- বীরের এই রক্তস্রোত মাতার এ অশ্রুধারা
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম
- ঢাকার কথা
- ভাষা আন্দোলন ও শহীদ মিনার
- কাজী নজরুল ইসলাম: জীবন ও কবিতা
- কাজী নজরুল ইসলাম: জীবন ও সাহিত্য
- কাজী নজরুল ইসলামের গীতি সাহিত্য
- শহীদ মিনার
- আবদুল কাদির
- বাংলা ভাষা আন্দোলন
- বাংলাদেশের সাহিত্যে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ
- ভাষাতাত্ত্বিক প্রবন্ধাবলী
- আবুল মনসুর আহমেদ রচনাবলী
- বাংলা ব্যাকরণ সমীক্ষা
- নজরুল প্রসঙ্গে
- অমর একুশে ও শহীদ মিনার
- কাজী নজরুল ইসলাম: জীবন ও সৃষ্টি
- কিশোর কবি নজরুল
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ বছর (২০০৩)
- হাজার বছরের বাংলা সাহিত্য
পুরস্কার ও সম্মাননা
সাহিত্য চর্চা ও গবেষণার পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রেও অসাধারণ অবদানের জন্য ২০১২ সালে বাংলাদেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার”[৫][৬][৭] হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে।[৮] এছাড়াও তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, নজরুল একাডেমি পুরস্কার এবং মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদান রাখায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক লাভ করেছেন।[৯]
মৃত্যু
বিশিষ্ট নজরুল গবেষক জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর ২০২১) দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। [১০]
তথ্যসূত্র
- ↑ "এ সপ্তাহের সাক্ষাৎকার: অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম"। বিবিসি। জুন ১৮, ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৯, ২০১৬।
- ↑ "অধ্যাপক রফিকুলের জীবনাদর্শ অনুসরণ করা উচিত: তথ্যমন্ত্রী"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-০২।
- ↑ "জাতীয় অধ্যাপক হলেন আনিসুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম ও জামিলুর রেজা চৌধুরী"। বাংলা টিবিউন। ২০২০-০৫-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-১৯।
- ↑ "চলে গেলেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম | কালের কণ্ঠ"। Kalerkantho। ২০২১-১১-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-৩০।
- ↑ সানজিদা খান (জানুয়ারি ২০০৩)। "জাতীয় পুরস্কার: স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার"। সিরাজুল ইসলাম। বাংলাপিডিয়া। ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ। আইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭।
স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।
- ↑ "স্বাধীনতা পদকের অর্থমূল্য বাড়ছে"। কালেরকন্ঠ অনলাইন। ২ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ "এবার স্বাধীনতা পদক পেলেন ১৬ ব্যক্তি ও সংস্থা"। এনটিভি অনলাইন। ২৪ মার্চ ২০১৬। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ "প্রথম মাতৃভাষা পদক পাচ্ছেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলামসহ তিন ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০২১-০২-১৮। ২০২১-০২-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-২০।
- ↑ "চলে গেলেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম | কালের কণ্ঠ"। Kalerkantho। ২০২১-১১-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০১।
বহিঃসংযোগ
- "BBC Witness: 1943 Bengal Famine, with Prof. Rafiqul Islam"। BBC World Service। এপ্রিল ১, ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ৪, ২০১৭।