সাইপারমেথ্রিন
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/0/0b/Cypermethrin_3d.png/330px-Cypermethrin_3d.png)
সাইপারমেথ্রিন ( Cypermethrin) এক প্রকার সিনথেটিক পাইরিথ্রয়েড কীটনাশক যা বিশ্বব্যাপী কৃষি ও গার্হস্থ্য কীটপতঙ্গ দমনে ব্যাপক ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পাইরিথ্রয়েড মুলত সুর্য্যমুখী ডালিয়া জাতীয় ফুলের বীজ ও পাপড়িতে পাওয়া যায়। এটি স্পর্শক ও পাকস্থলি ক্রিয়া সম্পন্ন কীটনাশক। এই পোকা মাকড়ের জন্য দ্রুত কার্য্যকর নিউরোটক্সিক হিসেবে কাজ করে থাকে। এটি দ্রুত মাটিতে কিংবা বাসাবাড়ীর দেয়ালে মিশে যায় এবং সপ্তাহেরও অধিক সময় কার্যকর থেকে সরাসরি পোকামাকড়দের আক্রান্ত করে মেরে ফেলে। প্রচুর অক্সিজেন, পানি ও সুর্যের আলো এই নিউরোটক্সিকের বিনাশ করতে সক্ষম। ন্যাশনাল পেস্টিসাইড টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক (এনপিটিএন) অনুসারে, সাইপারমেথ্রিন মাছ, মৌমাছি এবং জলজ কীটপতঙ্গের জন্য অত্যন্ত বিষাক্ত বিধায় মৌমাছি প্রজনন অঞ্চল ও মাছের উৎসের আশে পাশে এটি প্রয়োগে প্রচুর সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
ব্যবহারসমূহ
গবাদি পশু, ভেড়া ও হাঁস-মুরগির ক্ষতিকারক ইক্টোপারাসাইট নিয়ন্ত্রণে সাইপারমেথ্রিন ব্যবহার করা হয়। পশুচিকিৎসা ঔষধ, কুকুর উপর টিক ( ticks ) নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। লার্ভিসাইড হিসেবেও বহুল ব্যহৃত সাইপারমেথ্রিন মশা ও মাছির লার্ভা দমনে অত্যন্ত কার্যকর। তাছাড়া কৃষি ক্ষেত্রে অনেক ফসল ধ্বংসকারী পোকা দমনে সাইপারমেথ্রিন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ।
মানুষের শরীরে সংবিদেনশীলতা
সাইপারমেথ্রিন সুচের মাধ্যমে বা কাটাছেড়ার মাধ্যমে ত্বকের ভিতরে প্রয়োগ মাঝারি বিষাক্ত। এছাড়া এটির স্পর্শে ত্বক এবং চোখ এর জ্বালা হতে পারে। গিলে ফেললে বা যে কোন উপায়ে শরীরের ভেতরে প্রয়োগ করলে এর লক্ষণগুলি নিঃসংশোধন, ঝলকানি, জ্বালা, জ্বলন্ত সংবেদন, মূত্রাশয় নিয়ন্ত্রণ হ্রাস, অসঙ্গতি এবং মৃত্যুও হতে পারে। পাইরিথ্রয়েড বিপরীতভাবে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র প্রভাবিত করতে পারে। ম্যানুয়াল স্বেচ্ছাসেবকদের 130 টি μg / cm2 এর ডার্মাল ডোজ দেওয়া হয়, এয়ারলয়েবে স্থানীয় টিংলিং এবং জ্বলন্ত সংবেদন।
পরিবেশের জন্য কেমন?
সাইপারমেথ্রিন একটি বিস্তৃত বর্ণের কীটনাশক, যার মানে প্রয়োগপদ্ধতি অনুসরণ না করে এটি প্রয়োগ করলে এটি উপকারী কীটপতঙ্গ এবং লক্ষ্যবস্তু পোকামাকড়কেও হত্যা করে এবং জলাশয়ের মাছও এর দ্বারা আক্রান্তের শিকার হয়। কিন্তু যখন নির্দেশ অনুসারে ব্যবহার করা হয়, তখন আবাসিক স্থানগুলির কাছাকাছি আবেদন জলজ প্রাণীর জন্য কেবল সামান্যই ঝুঁকি সৃষ্টি করে। বিশ্বব্যাপি প্রচুর সাইপারমেথ্রিন ব্যবহারে এটি দ্রুতই পোকামাকরের সহ্য করার ক্ষমতার মধ্যে চলে আসছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে এটার প্রয়োগ সফল নাও হতে পারে।
ফরমুলেশন ও বিষাক্ততার মাত্রা
এটি বেশ কিছু ফরমুলেশনে বাজারে বিক্রয় হয়। তার মধ্যে ইসি (ইমালসিফ্লাই কনসান্ট্রেন্ট), ডাব্লিউ পি (ওয়াটাবল পাউডার), এস এল (স্ল্যুবল লিকুইড) , এস সি (সাস্পেনশন কনসান্ট্রেন্ট) ও বাইট ফরমুলেশন অন্যতম। মুলত লার্ভিসাইড হিসেবে বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয় এই কীট নাশক এর বেশির ভাগ ফরমুলেশনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেজার্ডাস লেভেল ii বা মধ্যম মাত্রার হেজার্ডাস হিসেবে বিষেশায়িত।
কেস নাম্বার | ৫২৩১৫-০৭-৮ |
---|---|
ইউ এন নাম্বার | ৩৩৫২ |
কেমিক্যাল টাইপ | পাইরেথ্রইয়েড |
হ্যাজার্ডাস লেভেল | ২ (মধ্যম বিষাক্ত) |
ই এইচ সি | ৮২ |
এইচ এস জি | ২৫ |
জে ই সি এফ এ | ১৯৯৬ |
আই সি এস সি | ২৪৬ |
ডি এস | ৫৮ |
উল্ল্যেখযোগ্য উৎপাদক ও ব্রান্ড
বি এ এস এফ বিশ্বব্যাপি সাইপারমেথ্রিন এর বড় উৎপাদক ও সরবরাহকারী। বি এ এস এফ সরবরাহকৃত এর রিপকর্ড ১০ ইসি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও সর্বাধিক বিক্রীত কীটনাশক।